শীতের কৃষি
গাজী মাজহারুল ইসলাম অপু*
শীতকাল নিশ্চিত মৌসুম অনেক ফসলের জন্য
অধিক ফসল ফলিয়ে আমার দেশকে করবো ধন্য।
ফুলকপি বাঁধাকপি লাউ মুলা গাজর আছে কত
টমেটো বেগুন শালগম ওলকপি শাকসবজি শিম শত শত।
শুকনা ভাব আছে বলে এ মৌসুমে সেচ দিতে হয়
সেচ না পেলে ভালো ফলন তাতে হওয়ার নয়।
জৈবসার রাসায়নিক সার সুষম মাত্রায় দেবে
সময় মতো যত্নআত্তিতে অধিক ফলন নেবে।
শাকজাতীয় ফসল আবাদ একের অধিক ভাই
একই জমিতে তিন-চারবার আবাদ করলে পাই।
স্বাদে গন্ধে পুষ্টিতে ভরা শীত মৌসুমের ফসল
গোলা ভরে নাও তোমরা খাটিয়ে বিশেষ কৌশল
ডাল ফসল তেল ফসল আরও কত আছে
শ্রম দিয়ে ঘাম বিনিয়োগে পাবে হাতের কাছে।
গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করো বোরো ধানে ভাই
কম খরচে বেশি লাভ এর তুলনা নাই।
আইপিএম আইসিএম প্রয়োগ করো ক্ষেতে
পরিবেশবান্ধব কৃষি দিয়ে উঠব সবাই মেতে।
অপকারি পোকামাকড় ধ্বংস কর তবে
বন্ধু পোকা বাঁচিয়ে রাখলে বেশি ফলন হবে
হাত পরাগায়ন পরিচর্যা আগাছা বাছাই করে
নিশ্চিত ফলন তুলে নাও গোলা কিংবা ঘরে
মোটেও কর না হেলাফেলা শীতের মৌসুম এলে
যত পার ফলিয়ে নাও অলস সময় ফেলে।
কৃষি দিয়ে সমৃদ্ধ করব আমাদেরই দেশ
সুখে শান্তিতে টইটুম্বুর সোনার বাংলাদেশ॥
কৃষিতে স্বাধীনতা
মো. জুন্নুন আলী প্রামাণিক**
স্বাধীনতা কৃষককে দিয়েছে মুক্ত কর্ম শক্তি,
পরাধীন নির্যাতনে নীরব কষ্ট থেকে মুক্তি।
চারিদিকে বিকশিত ফসল মাঠ স্নিগ্ধ রূপে,
আধুনিক চাষাবাদ নির্বিঘ্নে চলে নানা ধাপে।
নির্বিচার অত্যাচার মিটিয়ে গেছে আর নেই,
ঘাতকেরা পরাজয়বরণ করে জব্দ তাই।
অনাহূত অন্যায়ের ছোবল মেরে ক্ষতি করে,
হিংসার লেলিহান শিখায় শান্তি পায় পুড়ে।
উদ্ভিদের ছায়াময় শাখায় আজ পাতা নড়ে,
নির্মলতা বিস্তরণে স্বাধীন বায়ু ছোটে উড়ে।
সমৃদ্ধির জোয়ারের চলন্ত স্রোতে নব সাড়া,
ফুলফল নির্দ্বিধায় রূপের মাঝে হয় সেরা।
খাদ্যশস্য ফলানোর সোনালি আশা মনে ফোটে,
সারা দিন উৎসাহে চঞ্চল চাষি মাঠে খাটে।
স্বাধীনতা সুপথের সন্ধান দিয়ে ডাকে জোরে,
সারেসিক্ত মৃত্তিকার সবুজ বুক শস্যে ভরে।
গাছগুলো বাড়ার প্রেরণা পেয়ে শুধু বাড়ে,
বণ্যপ্রাণী বনানীর আড়ালে ভীতিশূন্য ঘরে।
বৃহত্তর ক্ষুদ্রতর খামার গড়ে মুগ্ধ চাষি,
কৃষি ক্ষেত্র উন্নয়ন সান্নিধ্যে ফল দেয় বেশি।
অনাহার অভাবের দুর্দিনগুলো গেছে সরে,
মাছে ভাতে বাঙালির সান্ত¡না জোটে স্বস্তি ফেরে।
স্বাধীনতা কৃষকের সহায় শক্তি ফিরে দেয়,
প্রযুক্তির প্রগতির ধারায় চাষি ধন্য হয়।
মৌসুম যখন শান্ত
মৌসুম যখন সহজ সরল শান্ত মেজাজে থাকে,
আকাশে বাতাসে জমিনে তখন মিষ্টি পাখিরা ডাকে।
বিচিত্র ফসলে মাঠের বুকটি শক্তি সান্ত¡না পায়,
কৃষান-কৃষানি সার্থক শ্রমের প্রাপ্তি দু’হাতে লয়।
সময় মতন বৃষ্টির জোগানে জমি সজাগ হয়,
সমস্যা থাকে না চাহিদা পূরণে সব ফসলে জয়।
শীতল বাতাস সোহাগে উড়িয়ে দিগি¦দিক ছোটে,
সবুজ হাসির শখের আবাদ পূর্ণ সকল মাঠে।
সুযোগ সুবিধা এগিয়ে চলার পথ ধরিয়ে আসে,
ফলন অধিক নিয়ম মানায় কৃষি বারটি মাসে।
চাঁদনি আকাশ রাতেরবেলায় জ্বলে আলোর মতো,
স্বচ্ছতা প্রকাশে সুনীল শূন্যের রূপ লহরী শত।
তারকাগুলোর ছড়ানো আলোক রশ্মি মাটিতে পড়ে,
অনন্ত অসীম সীমানা তখন দৃষ্টিসীমার ধারে।
স্বাগত জানার ঘাটতি থাকে না চাষি নিমগ্ন ক্ষেতে,
ওষুধ সারের অভাব হয় না সুষ্ঠু উপায়ে দিতে।
অনেক প্রকার সবজি জমিতে নিজ গতিতে বাড়ে,
দায়িত্বে বিশুদ্ধ রাখলে সেসব পুষ্টি জোগায় জোরে।
বন্যার কবলে খরার প্রকোপে বাধা বিপত্তি হলে,
উপায় পাবার অনেক সুযোগ আছে কৃষি অফিসে গেলে।
সহায় জোগাড় মৌসুমি বায়ুর সেবা যখন ভালো,
উন্নত জাতের ফসল তখন ছড়ায় সোনালি আলো॥
*গ্রাম-পূর্ব ধুপতি, ডাকঘর-ধুপতি, সদর, বরগুনা। **গ্রাম-বিদ্যাবাগিশ, ফুলবাড়ী, জেলা-কুড়িগ্রাম লঁহহঁহ১৯৬২@মসধরষ.পড়স